Google এর চাকরি ছেড়ে শুধু সিঙ্গারা বিক্রি করে কোটিপতি! – বিশ্বের সেরা আইটি প্রতিষ্ঠান ‘গুগল’-এ চাকরি। লোভনীয় বেতন। মার্কিন মুলুকে বিলাসবহুল জীবন। এই সব ছেড়ে কেউ যদি শিঙাড়া বেচার কথা ভাবেন, তবে তাঁকে ‘পাগল’ ছাড়া আর কিছু বলার থাকে না। কিন্তু
মু্ম্বইয়ের বাসিন্দা ২৯ বছরের মুনাফ কাপাডিয়া এমনই। ঝুঁকিটা তিনি নিয়েই ফেলেন শুধু শিঙাড়া বেচবেন বলে। গুগলের চাকরি ছেড়ে, বিদেশ থেকে দেশ ফিরে খুলে বসেন রেস্তোরাঁ। নাম ‘দ্য বোহরি কিচেন’। কীমাশ্চর্যম! মায়ের পরামর্শ মূলধন করে মাত্র ৩ বছরেই অভাবনীয় সাফল্য।
এখন বছরে ৫০ লক্ষ টাকা লেনদেন হয় তাঁর ব্যবসায়। মুম্বইয়ের নার্সি মনজি থেকে এমবিএ করে বছরখানেক দেশেই চাকরি করেছিলেন মুনাফ। তখনই ডাক আসে গুগল থেকে। আমেরিকায় কয়েক বছর ছিলেনও। কিন্তু বিদেশে মন টিল না তাঁর। মায়ের হাতের রান্না, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা
ভিড় করতে মনের কোনে। এদিকে দেশে মা নাফিসারও একই অবস্থা। সারাক্ষণ শুধু ছেলেরই চিন্তা। শেষমেষ বাক্স-প্যাঁটরা গুছিয়ে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরলেন। শান্তি পেলেন মাও। মা নাফিসা রান্না করতে খুব ভালোবাসেন। তাই দেশে ফিরে মায়ের পরামর্শেই শুরু করলেন রেস্তোরাঁ ব্যবসা।
নিজের বাড়ির খাবারকে মিস করেন প্রায় সবাই। বিশেষ করে যারা বিদেশ বিভূঁইয়ে থাকেন। স্বপ্নের নগরী মুম্বইতে তো এমনই মানুষের সংখ্যাই বেশী। এই ভাবনা থেকেই মুনাফ শুরু করলেন মায়ের হাতে তৈরি রান্না খাবারের ব্যবসা। রেস্তোরাঁর ট্যাগলাইন – ‘মায়ের হাতের খাবার’। শুরুর
কয়েকদিনের মধ্যেই মুনাফের রান্না ঘরের ‘মাটন শিঙাড়া’য় তৃপ্ত হল সবার রসনা। মুনাফের মা নাফিসার বিশেষত্বই স্মোকড মাটন কিমা সমোসা। পাতি বাংলায় মাংসের শিঙাড়া। তাকেই মুখ্য স্টার্টার করলেন মুনাফ। সঙ্গে চিকেন-মাটন দিয়ে সাজানো মেইন কোর্স, সুশীতল পানীয়
এবং জিভে জল আনা মিষ্টির রকমারি পদ। ব্যস, রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে গেল ‘দ্য বোহরি কিচেন’। তারকা থেকে ফাইভ স্টার হোটেল কর্তৃপক্ষ, মুনাফের শিঙাড়ার প্রশংসায় পঞ্চমুখ সবাই। তবে শুধু শিঙাড়া নয়। মা-ছেলে মিলে আরও বেশ কিছু খাবার যোগ করেছেন মেনুতে।
দুপুর থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত মুনাফের রেস্তোরাঁর সামনে এখন লেগে থাকে ভোজনরসিকদের লাইন। সম্প্রতি ফোর্বস ম্যাগাজিন ‘আন্ডার থার্টি’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে মুনাফ কাপাডিয়ার নাম। মুনাফের ইচ্ছে, ব্যবসাকে পঞ্চাশ লক্ষ থেকে নিয়ে যাবেন পাঁচ কোটিতে। দেশের গণ্ডী টপকে ব্যবসাকে ছড়িয়ে দেবেন বিদেশেও। সেই লক্ষ্যেই পথ চলা শুরু করেছেন মুনাফ। হ্যাঁ, সামনে এখনও অনেকটা পথ…