









বিশ্বকর্মা নাম হওয়ার হিসাবে যা বলা যায় এই বিশ্ব তাঁরই কর্ম বলে তাঁর নাম বিশ্বকর্মা। তিনি সকল যুগেই অমর কিছু সৃস্টি করেছেন। বেদের যিনি বিশ্ব স্রষ্টা, পুরানে তিনি দেবতাদের অন্যতম প্রধান শিল্পী। তাকে স্বর্গের একজন দেবতার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তিনি শতরকম শিল্প জানেন। তিনি দেবতাদের সকল রকম শিল্পের কারিগর। কারিগরি সকল বিদ্যার উদ্ভব হয়েছে বিশ্বকর্মার হাতে। দেবতাদের রথ, অস্ত্রশস্ত্র, সবকিছু তিনিই নিজ হাতে তৈরি করেছেন।





সত্য, ত্রেতা দ্বাপর এবং কলি প্রতিটি যুগেই তার শিল্প কর্মের নিদর্শন পাওয়া যায়। বিশ্বকর্মার বিভিন্ন নির্মাণ সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর, কলি এই চার যুগ ধরে ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বকর্মার অমর কীর্তি। সত্যযুগে তৈরি করেছিলেন স্বর্গলোক। এখান থেকেই দেবরাজ ইন্দ্র মর্ত্যলোকের শাসন ব্যাবস্থা দেখতেন। ত্রেতা যুগে সৃষ্টি করেন সোনার লঙ্কা। দ্বাপর যুগে সৃষ্টি করেন দ্বারকা। আর কলিযুগের অমরসৃষ্টি হস্তিনাপুর ও ইন্দ্রপ্রস্থ।





দেবলোক : দেবতাদের অন্যতম গর্বের জায়গা হল দেবলোক।এই দেবলোক দখল করার জন্য বারেবারে অসুরেরা আক্রমন করেছে।এই দেবলোক নিজের হাতে বানিয়েছিলেন বিশ্বকর্মা।





সোনার লঙ্কা : পুরাণে কথিত আছে তিনি এই লঙ্কা মাতা পার্বতী এবং মহাদেবের জন্য নির্মাণ করেন।পরবর্তী সময়ে লঙ্কার রাজা রাবন মহাদেবকে সন্তুষ্ট করে তার কাছে বর রূপে বিশ্বকর্মা সৃষ্ট লঙ্কা চেয়ে নেন।সেই থেকেই লঙ্কার রাজা হয় রাবন।





দ্বারকা : দ্বাপর যুগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিজ বাসভূমি নির্মাণের জন্য দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা নিজ হাতে দ্বারকা নির্মাণ করেন।বর্তমানে এটি গুজরাটে অবস্থিত।এই মন্দির দেখার জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার পুণ্যার্থী এখানে আসেন।মন্দিরের কারুকার্য আজও বিস্ময় সৃষ্টি করে।





হস্তিনাপুর এবং ইন্দ্রপ্রস্থ : কৌরব এবং পাণ্ডবদের যুদ্ধ নিয়ে মহাভারতের গল্প আমাদের প্রায় সবার জানা।হস্তিনাপুর রাজপ্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন স্বয়ং বিশ্বকর্মা।ঠিক তেমনি পাণ্ডবদের জন্য ইন্দ্রপ্রস্থ নির্মাণ করেছিলেন তিনি।





বিষ্ণুর সুদর্শন : কথিত আছে তিনি সূর্যের তেজের এক দশমাংশ তিনি কেটে নিয়ে বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র তিনি তৈরি করেন।যাকে জয় করার ক্ষমতা কারো নেই।
শিবের ত্রিশূল : শিবের ত্রিশূলও তৈরি করেন দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা।
পুস্পক রথ : যে রথে চেপে রাবন রামপত্নী সীতাকে অপহরণ করে এনেছিলেন সেই রথও বিশ্বকর্মা নাকি তৈরি করেছিলেন ।
জগন্নাথ বিগ্রহ : জগন্নাথ বিগ্রহ প্রথমবার তৈরি করেছিলেন বৃদ্ধ শিল্পী বেশ ধারণ করে নাকি বিশ্বকর্মা নিজেই। এছাড়াও যে বিমানে চড়ে দেবতারা গমন এবং ভ্রমন করতেন সেই সবকিছু বিশ্বকর্মার তৈরী। বিভিন্ন দিব্য বান- যা কেবল দেবতাদের অস্ত্রাগারে থাকতো, অসুরদের সাথে যুদ্ধে ব্যবহার করতো, সেই সবকিছুও বিশ্বকর্মার তৈরী। যে ধনুক দিয়ে ভগবান মহেশ্বর ত্রিপুরাসুর নামক এক অসুরকে বধ করেছিলেন, যে ধনুক পরশুরামের কাঁধে শোভা পেতো- সেই ধনুক বিশ্বকর্মার সৃষ্টি।





বৃত্রাসুর বধের জন্য বিশ্বকর্মা দধীচি মুনির অস্থি থেকে বজ্র তৈরি করে দেবরাজ ইন্দ্রকে দিয়েছিলেন। এছাড়াও মহিষাসুর বধের জন্য দেবী মহামায়া বা দুর্গা প্রকট হলে দেবীকে তীক্ষ্ণ বর্শা, অভেদ্য কবচ এবং বহু মারনাস্ত্র বিশ্বকর্মা প্রদান করেন। রামচন্দ্রের সেতু বন্ধনের অন্যতম কারিগর ছিল নল নামের এক বানর। এই বানর নাকি ছিল বিশ্বকর্মার পুত্র।
























