









স্কুলের গণ্ডি পেরোনের আগেই নিজের – কে না চায় ধনী হতে? কিন্তু সম্পদশালী হওয়া মোটেই সহজ না। মানুষ অনেক পরিশ্রম, চেষ্টা আর ভাগ্যের বদৌলতে একসময় অনেক টাকা উপার্জন করতে সক্ষম হয়। অনেকে সারাজীবনেও সক্ষম হয় না। আবার,
এমন অনেক কোটিপতি স্বর্ণ শিশু আছে যাদের সমবয়সীরা অর্থের মূল্যটাও ঠিকমতো বুঝে উঠতে পারেনি। আজ আমরা কথা বলবো এমনই কিছু শিশু কিশোরদের নিয়ে যারা কৈশোর পেরোনোর আগেই মালিক হয়েছেন অঢেল টাকা-পয়সার! ‘ইভানটিউব’র ইভান: একজন আট বছরের শিশু সারাদিন কি করে? অফুরন্ত দুষ্টামি আর নিজস্ব খেলনার ভাণ্ডার নিয়ে খেলাধুলা। বাকি সব বাচ্চারা যখন নিজস্ব খেলনা নিয়ে ব্যস্ত, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনিসেলভেনিয়ার





ইভান ব্যস্ত বাৎসরিক ১৩ লাখ মার্কিন ডলার উপার্জনে! হ্যাঁ, বলছিলাম ইউটিউব চ্যানেল ‘ইভানটিউব এইচডি’র ইভানের কথা। ইউটিউবে যার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৬০ লাখেরও বেশি। সবচেয়ে মজার ব্যপার কি জানেন? ইভানের চ্যানেলে সে শিশুদের বিভিন্ন খেলনা, পুতুল আর ভিডিও গেমসের উপর রিভিউ দেয়। এই খেলনার উপর রিভিউ দিয়েই ইভান প্রতিবছর উপার্জন করছে প্রায় আট কোটি টাকা! ‘কিচাটিউব’র নিহাল: ছোটবেলা থেকেই রান্নাবান্নার দিকে ভীষণ আগ্রহ ভারতের





কেরালা রাজ্যের নিহাল রাজের। চার বছর বয়স থেকে মায়ের সাথে এটা-ওটা রান্না করে সে। বড় বোনের উৎসাহে, বাবার সাহায্যে ‘ইভানটিউব’র মতো একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলে, নাম দেয় ‘কিচা টিউব’। সেখানেই চলতে থাকে তার রান্নাবান্না। ব্যাস! আর সাধারণ বাচ্চাদের কাতারে থাকল না নিহাল। কারণ ছয় বছর বয়স পার হওয়ার পূর্বেই তার





বাৎসরিক উপার্জন হয়ে গেলো প্রায় ১.৫ লাখ রুপি! ইউটিউব চ্যানেলে তার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজারের মত। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তার সাবস্ক্রাইবারদের ভিতরে আছেন ফেইসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ এবং মার্কিন কমেডিয়ান-উপস্থাপক এলেন ডি জেনেরেসও। বেশ কয়েকদিন আগে এলেন ডি জেনেরেস তার শোতেও নিহাল রাজকে আমন্ত্রণ করেন। সামলি’র নিক: ১৭-১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীরা যখন প্রোগ্রামার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে,





তখন যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডের অধিবাসী নিক ডি অ্যালিওসিওর সফটওয়ার ‘সামলি’ ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে কিনে নেয় ইয়াহু। এখন ইয়াহুতেই কর্মরত আছেন নিক ডি অ্যালিওসিও। এখানেই থেমে নেই নিকের সাফল্য। টাইম ম্যাগাজিনের ‘টাইম ১০০’তে নিকের নাম ওঠে ‘সেরা প্রভাবশালী কিশোর’ হিসাবে, ওয়াল স্ট্রিট ম্যাগাজিনে তার নাম উঠে ‘সময়ের সেরা সংস্কারক’ হিসেবে। চিয়ার্স অ্যান্ড টিয়ারস’র জনসন: ঘটনার শুরু ১৯৯৪ সালে। ভার্জিনিয়ায় নিজেদের বাসায় দেয়া





পার্টির গেস্টদের আমন্ত্রণ জানাতে নিজ হাতে কিছু নিমন্ত্রণ কার্ড বানিয়েছিল নয় বছর বয়সী ক্যামেরন জনসন। অতিথিরা শুধু সেই নিমন্ত্রণ পত্রের প্রশংসাই করেননি, টাকার বিনিময়ে জনসনকে আরও কিছু কার্ড বানাতে বলে। কাজটা মনে ধরল জনসনের। চলতে লাগলো কার্ড বানানোর কাজ, সেইসাথে উপার্জনও হতে লাগলো। বয়স এগারো হবার আগেই জনসন হাজার ডলারের মালিক হয়ে গেলো। সেই টাকা দিয়ে লোকাল মার্কেট থেকে পাইকারিভাবে কিনে ই-বে’তে (e-bay) পুতুল





বিক্রির ব্যবসা শুরু করলো সে। বারো বছর বয়সেই মালিক হয়ে গেলো ৫০,০০০ ডলারের। সেই টাকা দিয়ে সফটওয়ারের ব্যবসায় আসলো জনসন, সাথে যোগ হল দুই সহকর্মী। বড় হতে লাগলো জনসনের কোম্পানি। তার মতে, ‘যখন আমার বয়স ১৫, তখন আমি ৩০০,০০০-৪০০,০০০ ডলারের ব্যাঙ্ক চেক পাওয়া শুরু করেছি। এবং হাইস্কুল গণ্ডি পার করার পূর্বেই, ক্যামেরুন জনসনের সম্পত্তির পরিমাণ হয় এক মিলিয়নেরও অধিক! ডুবিটের হিলড্রেথ: ১৯৯৯ সালে ওয়েস্ট





ইয়র্কশারের ১৪ বছর বয়সী অ্যাডাম হিলড্রেথ তার বন্ধুদের সাথে ঘরে বসেই চ্যাট করার জন্য ‘ডুবিট’ নামক একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট চালু করে। দিনে দিনে ডুবিটের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। একসময় সকল কিশোর কিশোরীদের সঙ্গী হয়ে ওঠে ডুবিট। ডুবিট অল্পবয়সীদের মাঝে এতোই পছন্দের হয়ে ওঠে যে কোকাকোলা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ড্রিঙ্কস, চকলেট এবং চিপস কোম্পানিগুলো ডুবিটে বিজ্ঞাপন দেয়া শুরু করে। হিলড্রেথ চার বছর ডুবিটের





ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিল। এর মধ্যে ডুবিট যুক্তরাজ্যের ‘মোস্ট ভিজিটেড ওয়েবসাইট’এ পরিণত হয়। এবং বয়স ১৯ পেরোবার আগেই হিলড্রেথের সম্পত্তির পরিমাণ হয়ে দাঁড়ায় দুই মিলিয়ন পাউন্ড, যা প্রায় ৩.৭ মিলিয়ন ইউএস ডলারের সমতুল্য! মো’স বোয়ের মোজাইয়া: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রদেশ টেনেসির মেমফিস শহরের নয় বছর বয়সী মোজাইয়া ব্রিজ ছোট বেলা থেকেই সবসময় বো টাই পরতে ভালবাসে। কিন্তু তার বয়সীদের জন্য যে বো টাইগুলো পাওয়া যেতো তা পছন্দ





হতো না তার। একসময় দাদীর কাছ থেকে সেলাই মেশিনের ব্যবহার আর মায়ের কাছে হাতে সেলাই করা রপ্ত করে নিজেই নিজের বো টাইয়ের কালেকশন বাড়িয়ে চলল। বন্ধু এবং প্রতিবেশিমহলে এক সময় মোজাইয়ার হাতের কাজের সুনাম ছড়িয়ে গেলো, সবাই তার কাছ থেকে বো টাই কেনা শুরু করল। একসময় ফেইসবুকে শুরু হল মোজাইয়ার বো টাইয়ের বেচাকেনা। মা, বাবা, দাদিও এগিয়ে আসলো মোজাইয়াকে সাহায্য করার জন্য। নিজস্ব ওয়েবপেজে শুরু হল





মো’স বোয়ের ব্যবসা। টেনেসি ছাড়াও সাউথ ক্যারোলিনা, টেক্সাস প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে মো’স বোয়ের শাখা খোলা হল। ১২ বছর বয়সী মোজাইয়ার বাৎসরিক আয় প্রায় ২০০,০০০ মার্কিন ডলার! কথায় আছে, শিক্ষার কোন বয়স নেই। তেমনি,
ব্যবসার কোন নির্দিষ্ট বয়স নেই। ইচ্ছা থাকলে, ধৈর্য এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হওয়া সম্ভব। শুধুমাত্র স্বপ্নটার পিছে লেগে থাকতে হয়। তবে আর দেরি কেন, প্রথাগত চাকরির পিছে না ছুটে, একটু বিকল্প চিন্তা করে, সফল হই নিজের ভাল লাগার জায়গাগুলো থেকেই। তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
























