









শক্তিপীঠ হিন্দুধর্মের পবিত্রতম তীর্থগুলির অন্যতম। লোকবিশ্বাস অনুসারে, শক্তিপীঠ নামাঙ্কিত তীর্থগুলিতে দেবী দাক্ষায়ণী সতীর দেহের নানান অঙ্গ প্রস্তরীভূত অবস্থায় রক্ষিত আছে। সাধারণত ৫১টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়ে থাকলেও, শাস্ত্রভেদে পীঠের সংখ্যা ও অবস্থান নিয়ে মতভেদ আছে। পীঠনির্ণয় তন্ত্র গ্রন্থে শক্তিপীঠের সংখ্যা ৫১। শিবচরিত গ্রন্থে ৫১টি শক্তিপীঠের পাশাপাশি ২৬টি উপপীঠের কথাও বলা হয়েছে। কুব্জিকাতন্ত্র গ্রন্থে এই সংখ্যা ৪২। আবার জ্ঞানার্ণবতন্ত্র গ্রন্থে পীঠের সংখ্যা ৫০।





ভারতীয় উপমহাদেশের নানা স্থানে এই শক্তিপীঠগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সতীর একান্ন পীঠের কাহিনি অনুসারে পীঠস্থানগুলিকে চিহ্নিতকরণের কাজ প্রাচীন কালেই সম্পন্ন হয়েছিল। ভারতীয় উপমহাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে এই পীঠস্থানগুলি। পতি শিবের নিন্দা শুনে দক্ষকন্যা সতীর দেহত্যাগ এবং তার পরে শোকার্ত এবং রুদ্র শিবের সতীদেহ কাঁধে নিয়ে তাণ্ডব আর তাঁকে থামাতেই বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র দ্বারা সতীদেহ খণ্ড-বিখণ্ডকরণ সতীপীঠ বা শক্তিপীঠের প্রধানতম মিথ।





শক্তিপীঠগুলির প্রকৃত স্বরূপ ঠিক কী, তা নিয়ে বিস্তর মত ব্যক্ত করেন ধর্মীয়-সমাজতত্ত্বের পণ্ডিতরা। কিন্তু তাতে শক্তিপীঠের রহস্য দূর হওয়ার বদলে বেড়েই যায়। তার থেকেও যেটা রহস্যময় প্রসঙ্গ, সেটা এই— পুরাণে ৫১টি পীঠের নাম ও সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা থাকলেও এখনও পর্যন্ত ৪৭টি শক্তিপীঠের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ৪টি সতীপীঠ ঠিক কোথায়, আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি।





রত্নাভল শক্তিপীঠ:পুরাণের বিবরণ থেকে জানা য়ায় এই পীঠস্থানটি চেন্নাইয়ের কাছাকাছি কোনও স্থানে। কিন্তু ঠিক কোথায়, তা আজও জানা যায়নি। মিথ অনুযায়ী, সতীর দক্ষিণ স্কন্ধ এখানে পতিত হয়েছিল। এই পীঠে সতীকে ‘কুমারী’ এবং শিবকে ‘ভৈরব’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।





কালমাধব শক্তিপীঠ:পুরাণের বর্ণনা অনুযায়ী দেবীর নিতম্বদেশ এই স্থানে পড়েছিল। এখানে সতীর নাম ‘কালমাধব’ এবং শিবের নাম ‘অসিতানন্দ’। কিন্তু এই পীঠের হদিশ আজও পাওয়া যায়নি।





শ্রীলঙ্কার শক্তিপীঠ:পুরাণের বর্ণনা অনুসারে, শ্রীলঙ্কায় দেবীর দেহাংশ পড়েনি। পড়েছিল দেবীর গহনা। এখানে দেবীর নাম ‘ইন্দ্রাক্ষী’ এবং শিব ‘রাক্ষসেশ্বর’। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই পীঠস্থানের সন্ধান মেলেনি। পঞ্চসাগর শক্তিপীঠ:কথিত আছে, এখানে দেবীর চোয়াল পতিত হয়েছিল। সতীদেবী এখানে ‘বারাহী’ নামে পরিচিতা। তবে আজও পঞ্চসাগর ঠিক কোথায় তা জানা যায়নি।
























