দারিদ্রতা ও আর্থিক অনটন থাকলে অনেকেই সততার পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়। কিন্তু উত্তরপাড়ার পিন্টু মান্না এর ব্যতিক্রমী। তিনি পথ থেকে কুড়িয়ে পাওয়া ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিলে ২১০০০ টাকা থানায় জমা করে সততার নজির গড়েছেন। এরকম সৎ মানুষ এখনকার কলিযুগে দেখা যায় না বললেই চলে।
উত্তরপাড়ার পিন্টু মান্নার ক্রাউন গেটের কাছে জি টি রোড লাগোয়া জেকে স্ট্রিটে ৪ বাই ৮ ফুটের একটি সেলুন আছে। তার বয়স প্রায় ৪৪ এর কাছাকাছি। সংসারে মা, স্ত্রী ও সন্তান আছে।
সারা দেশে ক’রো’না লকডাউন এর জেরে প্রায় পাঁচ মাস দোকান বন্ধ ছিল। তাছাড়াও এখন দোকান খুললেও ক’রো’না সং’ক্র’মনের ভয়ে কাস্টমার খুবই কম আসে। এর ফলে তার সংসারে প্রবল আর্থিক অনটন নেমে এসেছে।
এমনই অবস্থায় ষষ্ঠীর দিন সকালে কাস্টমারের অপেক্ষায় দোকানের বাইরে বসেছিল পিন্টু মান্না। হঠাৎই তার চোখে পড়ে রাস্তায় ৫০০ টাকার নোটের একটি বান্ডিল পড়ে আছে। সে সেই বান্ডিলটি কুড়াতে গেলে রাস্তার একজন লোক সেটা তার টাকা বলে দাবি করে।
পরে বান্ডিলে কত টাকা আছে জিজ্ঞাস করলে সেই লোক চুপচাপ চলে যায়। তারপর পিন্টু পাশাপাশি সব দোকানের মালিকদের সাক্ষী রেখে টাকা গোনে এবং দেখে ২১০০০ টাকা আছে। সে সেই টাকা তার আসল মালিককে ফেরানোর জন্য উপায় জানতে চাইলে সবাই বলে তার কাছে কিছুদিনের জন্য রেখে দিতে। মালিক যদি এসে খোজ করে তাকে দিয়ে দেওয়া যাবে।
কিন্তু অনেক দিন অপেক্ষা করার পরও কেউ সেই টাকা দাবি করতে আসেনি। কিন্তু সৎ পিন্টুর অন্যের টাকা আত্মসাৎ করার কোন চিন্তা ভাবনা ছিল না। তাই সে গত শুক্রবার স্ত্রী রুপালিকে নিয়ে থানায় যায়।
সেখানে সমস্ত ঘটনা বিস্তারে জানায় আইসি সুপ্রকাশ পট্টনায়েককে। বিধি মেনে টাকার বান্ডিল জমা করে দেন থানায়।দরিদ্র যুবকের এই সততাকে কুর্নিশ জানিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে পিন্টু বলেছে, অন্যের টাকা তার নিয়ে নেওয়ার কোন ইচ্ছা নেই। সে তার সেলুনের ব্যবসা চললেই খুশি।