ডা’স্টবিনে ফে’লে দেওয়া শিশু ২৫.. – ফুটফুটে এক শিশু ধীরে ধীরে বাবা- মা এর আদরে বড়ো হয়ে উঠে। তারপর তরুণ বয়সে জানতে পারলো তার জীবনের এমন এক বাস্তবতা তা পাষণ্ড মানুষকেও শীতল করে দেয়। তার জীবনের নাটকীয়তা সিনেমা বা গল্প কেও হার মানায়।
১৯৯৯ সালে ২১ শে নভেম্বর ক্যালি ফোর্নিয়ার এক পুলিশ অফিসার মাইকেল বুলেনার
এক অ’পরাধ কাণ্ডের ত’দন্ত করতে গেছিলেন কোনো এক স্থানে, সেখানে হঠাৎ ময়লা ভাগাড়ের থেকে বাচ্চা বিড়ালের মতো মাউ মাউ আওয়াজ শুনতে পেলেন। তার মনে সন্দেহের বাসা বাঁধতে থাকলো তাই তিনি আওয়াজ লক্ষ্য করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলেন , হতভম্ব হয়ে তিনি
সেখানে দেখেন একটি ফুটফুটে বাচ্চা। জন্মের পর তার নাড়ি টাও কাটা হয়নি। হতভাগা কে নিশ্চয় তার মা অথবা বাবা ফেলে রেখে গেছিল। সেই অফিসারের দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা প্রবল কান্না কোনো ভাবেই থামাতে পারছেন না, একটি ফুটফুটে শিশুকে কোনো মানুষ এভাবে ফেলে যেতে পারে। বড়ো আদরের স্নেহে অফিসার সেই শিশু টিকে কোলে তুলে নিয়ে কাছের একটি হসপিটালে ভর্তি করে দিলেন,
শিশুটির প্রাণ বেঁচে গেলো। তিনি শিশুটির নাম রাখেন আডাম। তার আডাম নামটি রাখার পিছনে একটি বড় ইতিহাস আছে।তিনি জানান যেভাবে হজরত আডলাম সালামকে সৃষ্টিকর্তা আলাউদ্দিন আলাইন পৃথিবীতে কোনো রকম বাবা-মা আর পরিচয় ছাড়া পাঠান তেমনি একই ভাবে এই সন্তানটি ও কোনো পরিচয় ছাড়াই এই পৃথিবীতে এসেছে, তাই তিনি আদর করে নামে রেখেছেন আডাম।অরেঞ্জ কাউন্টি রেজিস্টারে
আডমের নাম উঠে ইতিলের খাতায়। বুলেনার নিজেই একে দত্তক নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কাগজপত্র তৈরি করতে দেরি করায় অন্য একজন কাগজপত্র দিয়ে আডাম কে দত্তক নিয়ে নিলেন। ড্যানিয়েল দম্পতি তাকে অন্য শিশুদের মতোই নিজের ছেলে হিসেবে মেনে নিলেন এবং তার নাম রাখলেন রবিন। রবিন মা-বাবা এবং সুন্দর একটি পরিবার পেলেন।কিন্তু সময় অন্য রকম হতে থাকলো রবিন তার জীবনের সেই দুঃস্বপ্ন এর
কাহিনী জানতে পারলেন। ২৪ বছর বয়সী তরুণ রবিন জানতে পারলেন জন্মের পর তার স্থান হয়েছিল ময়লা ভাগাড়ে। এক পুলিশ অফিসার বুলেনা তাকে তুলে নিয়ে তার জীবন বাঁচিয়েছে। সেই মহান ব্যাক্তি কে দেখার জন্য রবিন ব্যকুল হয়ে উঠেছিল।শেষপর্যন্ত রবিন সেই মহান ব্যাক্তির “মাইকেল” এর খোঁজ পেলেন। তিনিও কখনো ভাবেনি ২৫বছর আগে যেই শিশুটিকে বাচিয়াছিলো সে তার সামনে এসে দাঁড়াবে,
2জনার চোখ দিয়েই অশ্রু ঝরছে। দত্তক নেওয়া বাবা-মা এর পর বুলেনা-কে দেখার সৌভাগ্য রবিনের হলো এবং রবিন বুলেনার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন।কিন্তু কাহিনী এখানেই শেষ নয়। রবিন তার আসল বাবা-মার খোঁজ করতে চাইলো , কিন্তু অজানা অচেনা মানুষকে খুঁজতে তো পুলিশের দরকার। কাজেই, রবিন বুলেনার কাছে সহায়তা চান এবং তিনি তার প্রস্তাবে রাজি হন। কয়েকমাস পরেই রবিনের মায়ের খোঁজ পাওয়া
যায়। তার মায়ের নাম সাবরিনা ডাউয়াক, এই নারী তার জন্মদাত্রী। এই নারীই ফুটফুটে শিশুটিকে অর্থাৎ রবিনকে ডাস্টবিনে ফেলে চলে গেছিলো।জানা গেছে সেই সময় সাবরিনার জীবনে অন্ধকার সময় ছিল। কিন্ত তাই বলে নিজের সন্তানকে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া টা কোনো ভাবেই মানা যায় না। শেষ পর্যন্ত রবিন তার আসল পরিবার খুঁজে পেল। তার পরিবারে আরো ৫টি বোন রয়েছে। কিন্তু রবিনের তার প্রতি
কোনো অভিযোগ ছিল না।আপনারা জেনে অবাক হবেন এই রবিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রসিদ্ধ ব্যাবসায়ী এবং বিলেনিয়া তে কোটি কোটি অর্থ সম্পদের মালিক। আজ জীবনে সে প্রতিষ্ঠিত এবং উজ্জ্বল এক ব্যাক্তিত্ব।