আমাদের জীবনের সর্বকালের সেরা শিক্ষক হল মা। ছোটবেলায় শিক্ষার হাতে খড়ি মায়ের হাত ধরে শুরু হয়। একজন সফল ছেলে বা মেয়ের পেছনে মায়ের অবদান অনস্বীকার্য। এইরূপ আরো একটি নিদর্শন দেখা গেল বারুইপুরে।
বারুইপুরের ছেলে সৌরদীপ সামন্ত তার সাফল্যের সমস্ত কৃতিত্ব দিল তার মা কে। সর্বভারতীয় মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষায় দুর্দান্ত র্যাঙ্ক করে সৌরদীপ। সর্বমোট ৭২০ নম্বরের মধ্যে সৌরদীপ অর্জন করে ৬৩০ নম্বর যার ফলে তার র্যাঙ্ক ১৫ লক্ষ পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পৌঁছে গেছে ৮৭৩৫ -এ।
সৌরদীপের বাবা অষ্টম শ্রেণী পাস এবং মাধ্যমিক পাস। বাবা সার্জিক্যাল সরঞ্জাম তৈরির একটি কারখানায় কাজ করে কলকাতায়। তার মাসিক উপার্জন ৭০০০ টাকা। সৌরদীপ এর পরিবার আর্থিকভাবে তেমন সচ্ছল নয়।
তেমন ভালো কোচিং এ পড়ার সুযোগ পায়নি সৌরদীপ কোনদিন ফলে পড়াশুনার যাবতীয় নোটস তাকে ইউটিউব থেকে সংগ্রহ করতে হতো। কয়েক মাস আগেই আম্ফান এর ফলে বিধ্বস্ত হয়েছিল নেট পরিষেবা ফলে সেই সময় সৌরদীপ নোটস সংগ্রহ করতে পারেনি ইউটিউব থেকে। অবশেষে কোনো বাধাই তাকে আটকে রাখতে পারেনি সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছতে।
সৌরদীপ তার সফলতার সমস্ত কৃতিত্ব দিয়েছে তার মা কে, সে বলেছে -মা তাকে পড়াশোনায় ভীষণভাবে সাপোর্ট করতো। মাধ্যমিক পর্যন্ত তাকে তার মা সাইকেলে করে তিন কিলোমিটার দূরে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আসত। রাত জেগে পড়াশোনা করলেও মা সর্বক্ষণ তার পাশে বসে থাকতো তাই সৌরদীপ্ত বলেছে তার সাফল্যের পিছনে একমাত্র হাত মায়ের।
লকডাউনে দেশের শিল্পের ভীষণভাবে ক্ষতি হয়েছে। সৌরদীপ এর বাবার বেতন কমে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে সে। বেতন কমে যাওয়ার ফলে তার বাবা কলকাতায় থেকে ওভারটাইম করে কাজ করতো এবং ঘণ্টাপ্রতি একটি রোজ পেত। এক সপ্তাহ পর পর বাবা বাড়িতে আসত বলে জানিয়েছে সৌরদীপ।
পাশাপাশি দুর্গাপুরের দেবকুমার চক্রবর্তী ও নিটে সাফল্য অর্জন করেছে। তার র্যাঙ্ক ছিল ২৬,২১৪। প্রবেশিকা পরীক্ষায় ৫৮৭ নম্বর অর্জন করে। যদিও দেব কুমার করণায় আক্রান্ত হওয়ার ফলে প্রথমে নিট পরীক্ষা দিতে পারেনি, এর ফলে সে যথেষ্ট হতাশ হয়ে পড়েছিল।
যারা বিশেষ কারণের জন্য নিট পরীক্ষা দিতে অক্ষম হয়েছিল তাদের জন্য কর্তৃপক্ষ ১৪ ই অক্টোবর পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন হলে দেব কুমার অবশেষে সুযোগ পায় পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার। করোনার প্রভাব কাটিয়ে উঠলেও ভীষণভাবে শারীরিক দুর্বল ছিল সে, এমনকি শেষের দিকে ভালো মতন প্রস্তুতিও করতে পারেনি। তবুও তার কঠিন পরিশ্রম অবশ্য তাকে সাফল্যতা অর্জন করায়।