









রাতে বিছানায় ঘুমিয়ে আছেন, হঠাৎ পায়ের পেশিতে টান, প্রচণ্ড ব্যথায় ঘুম ভেঙ্গে যায়। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে অনেকেরই। ব্যাথার কারণে পা সোজা বা ভাঁজ করা যায় না তখন। তবে বেশিরভাগ সময়ই ঘুম বা বিশ্রামের সময় এমনটা ঘটে বেশি।





কেন এমন হয়?
আমরা নিজেদের ইচ্ছানুসারে হাত বা পায়ের মাংসপেশী সংকুচিত বা প্রসারিত করে নড়াচড়া করি। কিন্তু আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে হঠাৎ কোনো পেশী সংকুচিত হয়ে গেলে পেশীতে খিঁচুনি (spasm) তৈরি হয়। আর এটাকে আমরা পেশীতে খিল ধরা বা রগে টান বলি।





সাধারণত নিম্নোক্ত কারণে এ সমস্যা দেখা যায়-
১. পানিশূন্যতা
২. স্নায়ু বা মাংসপেশীতে আঘাত
৩. রক্তে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম বা ম্যাগনেসিয়ামের অভাব
৪. কোনো কোনো ঔষধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ায়
৫. কিছু ভিটামিনের অভাবে- বিশেষ করে ‘বি’ ভিটামিন (B1, B5, B6)
৬. আরো কিছু কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যেমন : ধূমপান, মদ্পান, হাইপোথাইরয়েডিজম, কিডনি ফেইলিওর, মেন্সট্রুয়েসন, গর্ভসঞ্চার ইত্যাদি।
– অনেক সময় বেশি পরিশ্রমের কারণে পায়ের পেশিতে এভাবে টান লাগতে পারে। পেশিতে টান লাগা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। পা সোজা করতে গেলে ব্যথা আরও বাড়তে থাকে।





– ধূমপায়ীদের পায়ে রক্ত চলাচল কমে যায় বলে সামান্য হাঁটাহাঁটিতেই পায়ে টান লাগে। একই কারণে ডায়াবেটিক ও কোলেস্টেরলের রোগীদেরও পায়ে ব্যথা হয়।
– গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন স্নায়ুতে চাপ পড়ে বলে পায়ে প্রায়ই টান লাগে।
– পায়ের পেশির দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত ব্যবহার, একভাবে দীর্ঘ সময় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা।





পেশীতে খিল কী করবেন?
ক. আক্রান্ত পেশীকে দ্রুত (শিথিলায়ন) করতে হবে। এর উপায় হচ্ছে পেশী প্রসারিত করা। যা অতি দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে আরাম দিতে পারে।
খ. তাপ চিকিৎসা মানে গরম সেঁক দেয়া যায় যদি পেশী শক্ত হয়ে বসে য়ায়।
গ. পেশী নরম, ব্যথাযুক্ত আর ফুলে গেলে ঠাণ্ডা সেঁক দেয়া যায়।
ঘ. বাম বা জেল দিয়ে মালিশ করা যেতে পারে।
ঙ. ইলেক্ট্রোলাইটিক ড্রিঙ্ক, যেমন-ওরাল স্যালাইন দেয়া যেতে পারে।
চ. দীর্ঘ মেয়াদে ভালো থাকতে শাকসবজি, ফল, দুধ, মাংস এবং খেজুর খান পর্যাপ্ত পরিমাণে। এই খাবারের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণ পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়।





ছ. নেশা থাকলে তা বাদ দিতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
পেশী সম্প্রসারণের নিয়ম
৹ যদি হাঁটুর নিচে পায়ের পেছনে টান লাগলে : পা সোজা করে ফেলুন, হাত দিয়ে পায়ের আঙুলের মাথাগুলো ধরুন আর আপনার দিকে টানুন।
৹ উরুর সামনের দিকে হলে পা ভাঁজ করে ফেলুন, হাত দিয়ে পায়ের আঙুলের মাথাগুলো ধরুন আর আপনার নিতম্বের দিকে টানুন।
৹ যদি উরুর পেছনে খিল লাগে, তাহলে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। পা ভাঁজ করে হাটুঁ যতটুকু পারবেন বুকের দিকে নিয়ে আসুন। ধীরে ধীরে উরুর পেছনের পেশীতে হালকা মালিশ করুন।
==================





ঘুমানোর সময় মোবাইল যেভাবে রাখা উচিত ! জেনে নিন সঠিক পদ্ধতি !
ঘুমানোর সময় অনেকেই মোবাইল ফোন বন্ধ করেন না। অ্যালার্ম দিয়ে ফোনকে বালিশের নিচে বা পাশে রেখে দেন। আবার অনেকে ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোনটি সঙ্গী করেই ঘুমান। যারা এ কাজ করেন, তারা ঘুমানোর আগে বালিশের পাশে কিংবা বিছানার ওপর না রেখে কিছু দূরে কোনো কিছুর ওপরে ফোনটি রাখুন। কারণ মোবাইল ফোনের উপকারিতার পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর দিকও আছে। তবে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই ঘুমানোর সময় মোবাইল কীভাবে রাখা উচিৎ।





ফোন দূরে রাখুন: রাতে ঘুমানোর সময় ফোনটি সঙ্গে না রেখে দূরে রাখুন। আপনার ফোন রাখার জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ রাখুন। যেখানে চার্জার, হেডফোন বা অন্যান্য টুকিটাকি দরকারি জিনিসপত্র রাখেন, আপনার মোবাইল ফোনটিও সেখানেই রেখে দিতে পারেন। হাতের কাছে ফোন থাকলে তা বারবার ব্যবহার করার আগ্রহ বাড়বে। এতে মস্তিষ্ক কিছুতেই বিক্ষিপ্ত না হয়।





ফোন বালিশের নিচে রাখবেন না: বালিশের পাশে বা নিচে পড়ে থাকা ফোনটিতে কল এলে আচমকা ঘুম ভেঙে যায়। মোবাইল ফোন কখনোই বালিশের পাশে রেখে ঘুমাবেন না। ঘুমানোর সময় কিছুটা দূরে সরিয়ে রাখলে ঘুম ভালো হয়।





ফেবসুক, মেইল বন্ধ রাখুন: ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনার ফোনের ফেসবুক, মেইল বন্ধ রাখতে হবে। অনেকেই ফেসবুক চালাতে চালাতে ফোন চালু রেখেই ঘুমিয়ে যান। আবার অনেকেই ঘুমানোর আগে দীর্ঘ সময় মেইল ব্যবহার করেন বা গেম খেলেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন- এ ধরনের অভ্যাস ঘুমানোর জন্য মোটেও ভালো নয়। এতে মানসিক চাপ বাড়তে থাকে।





গান শুনতে শুনতে ঘুম: অনেকেই মোবাইল ফোনে গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েন, যা মস্তিষ্কের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আবার দেখা যায়, মোবাইল ফোনের সঙ্গে হেডফোন লাগিয়ে তা কানে দিয়ে ঘুমানোর আগে গান চালান অনেকেই। এটি আরও মারাত্মক ক্ষতিকর।





ফোনের স্ক্রিনের আলো চোখের রেটিনার ক্ষতি করে: রাতের অন্ধকারে ফোনের স্ক্রিনের আলো মানুষের চোখের রেটিনার পক্ষে ক্ষতিকারক। এ আলোই আমাদের মস্তিষ্ককে জানান দেয় ফোন অথবা ম্যাসেজ আসার প্রাথমিক খবর। এই আলো তন্দ্রার জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনকে নিঃসরণ হতে বাধা দেয়।





ফোন ঘুমকে বাধাগ্রস্ত করে: বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফোন ও মস্তিষ্কের মধ্যে অল্প তফাৎ থাকলে তা ঘুমের পরিমাণ ও ঘুমের মান দুয়ের ওপরেই প্রভাব ফেলে। ফোন কাছে নিয়ে শুইলে তা আমাদের স্নায়ুকে উত্তেজিত রাখে। অবচেতনে আমরা পরের ফোন অথবা ম্যাসেজের জন্য অপেক্ষা করে থাকি, যা আমাদের বেশিক্ষণ চোখ বন্ধ করে রাখতে দেয় না
























