দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার হালত খারাপ। বেকারত্ব ঘরে ঘরে। লাখ লাখ যুবক উচ্চ শিক্ষার ডিগ্রি নিয়ে বসে রয়েছেন ঘরে।
তাদের শিক্ষা কোনো কাজেই লাগছে না। লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক যুবতী সম্মানজনক একটা কাজের জন্য বছরের পর বছর লড়াই করছেন।
পরীক্ষায় পাস করেও চাকরি পাচ্ছেন না অনেকে। কর্মহীনতার চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন কেউকে উ।মাস্টার্স পিএইচডি,
করা ছাত্র-ছাত্রীরা হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। উচ্চ শিক্ষিত ছেলেরা চপ ভাজছে, টোটো চালাচ্ছে। এর থেকে হৃদয়বিদারক আজকের খবরে আর কিছুই নয়। একজন অঙ্কে মাস্টার্স করা যুবতী বেছে নিয়েছেন ডেলিভারি করার কাজ। জনপ্রিয় সংস্থা ফ্লিপকার্টের পার্সেল বাইকে করে ডেলিভারি করে বেড়ান সুপ্রীতি সিং। তার নিবাস হুগলি জেলার রাজাহাট। বিবাহিতা তিনি। স্বামী এবং বাপের বাড়ির পাশে দাঁড়ানোর জন্যই চাকরির অভাবে বেছে নিয়েছেন পার্সেল ডেলিভারির কাজ। শারদীয়াতে যখন মেয়ে বৌ-রা পাটভাঙা নতুন শাড়ি পড়ে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখে বেড়াচ্ছে তখন বাইক নিয়ে শহরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন সুপ্রীতি। তার পিঠে থাকা ব্যাগে হয়ত রয়েছে কারোর নবমীতে,
পড়ার শাড়িটা কিংবা দশমীতে পড়ার জুতোটা। মেয়েরাও যে যথেষ্ট কেরিয়ার মনস্ক এবং পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সদ্ভাবনা রেখে চলে তা ফের একবার প্রমাণ হয়ে গেল। সুপ্রীতিদেবীর মহিয়সী হওয়ার কারণ শুধু এতটুকু নয়। মাইনে পেয়ে বেশীরভাগটাই তুলে দেন পরিবারের হাতে। এছাড়াও নিজের কাছে যতটুকু ছিল তা দিয়ে নিজের এলাকার গরীব অনাথ বাচ্চাদের জামা কিনে দিয়েছেন তিনি, যাতে পূজোর দিনগুলোয় একটু হাসিখুশি থাকতে পারেন তাঁরা। এছাড়াও ডেলিভারির কাজ সেরে বাড়িতে ফিরে রান্নাবাড়ি সামলে তিনি এলাকার দুস্থ গরীব শিশুদের বিনমূল্যে পড়াতেও বসেন। ফলতঃ বোঝাই যাচ্ছে সুপ্রীতির গুন এবং মহানতা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তাই আমাদের তরফ থেকে তার প্রতি রইল অশেষ শুভকামনা।