Home / Hindu / গীতার ব্যাখ্যা বিজ্ঞান নির্ভর, অঙ্ক কষে আত্মার ওজন নির্ণয় করলেন এই বাঙালি বিজ্ঞানী

গীতার ব্যাখ্যা বিজ্ঞান নির্ভর, অঙ্ক কষে আত্মার ওজন নির্ণয় করলেন এই বাঙালি বিজ্ঞানী

নির্মলেন্দু দাস। জন্ম উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলায়। একসময় আকাশবাণীতে ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করেছেন। ২০০৯ সালে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৭২ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্সের ডিন ডঃ এসএন সেনের তত্ত্বাক্সবধানে গবেষণা করেন ম্যাগনেটিক এফেক্ট অন সাম কেমিক্যাল কম্পোজিশন নিয়ে। এরপর ধাপে ধাপে তিনি তাঁর বিজ্ঞান গবেষণা ও লেখালেখির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন। ২০০৪ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম বই। এরপর সেই বইয়ের কয়েকটি খণ্ড-ও প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞানী নির্মলেন্দুবাবু দাবি করেন, যারা মনের অসুখে আক্রান্ত তারা অনেকেই নাকি এখন ভালো আছেন তাঁর এই বই পড়ে।

তবে নির্মলেন্দুবাবুর লেখা ইংরেজি বই ‘এন্ডলেস থিওরি অফ দ্য ইউনিভার্স’ কিন্তু সাড়া ফেলেছে বিজ্ঞানী মহলেও। ২০১৪ সালে বইটি প্রকাশিত হয় জার্মানি থেকে। কী আছে সেই বইতে? নির্মলেন্দুবাবু বলেন, “আলোর কণার ওজন কত তা নিয়ে অনেকে গবেষণা করেছেন। একেকজনের পরীক্ষা লব্ধ ফল একেকরকম, কারোর সঙ্গে কারো মিল নেই। সঠিক আলোর কনার ওজন কত বের করা সম্ভব হয়নি। সাধারণভাবে বিজ্ঞানে আলোর কণার ওজন শূন্য ধরা হয়। কিন্তু শূন্য এমন একটি অবস্থা যা কোনও পদার্থের ওজন ব্যাখা করতে পারে না। সেই হিসাবে আমি এমন একটি সূত্র তৈরি করেছি যা একটি আলোর কণার ওজন বের করেছে। বেরিয়েছে আমার বই কমপ্লিট ইউনিফায়েড থিওরি।”

একসময় আকাশবাণীতে ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করেছেন নির্মলেন্দুবাবু

নির্মলেন্দুবাবু আরও জানাচ্ছেন, “১৮৭৩ সালে ম্যাক্সওয়েল যখন ইলেকট্রিসিটি এবং ম্যাগনেটিজমকে এক করে দেখাতে পেরেছিলেন তখন তিনি ইউনিফায়েড থিওরির কথা বলেন। তখন কিছু বিজ্ঞানী বলেন, ওটা ইউনিফায়েড থিওরি নয়, ইলেকট্রোম্যাগনেটিজম। এরপর পৃথিবীর বিভিন্ন বিজ্ঞানী যেমন আইনস্টাইন, স্টিফেন হকিং ইউনিফায়েড থিওরি নিয়ে গবেষণা করেছেন। একটি সূত্র বের করবার জন্য ইউনিফায়েড পরিপূর্ণ একীভূত তত্ত্ব বের করার চেষ্টা করে গিয়েছেন সকলে। ১৯২১ সালে আইনস্টাইন বলেন, যেদিন ইউনিফায়েড থিওরি আবিষ্কার হবে সেদিন ফিজিক্সের স্তম্ভ দৃঢ় হবে। কিন্তু আইনস্টাইনও ইউনিফায়েড থিওরি বের করতে পারেননি। স্টিফেন হকিংও তা পারেননি।

একটি থিওরি দিয়ে জাগতিক সব বিচার করা সম্ভব হয়নি। সেই হিসাবে আমার দেওয়া বইয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যাখা জাগতিক সব কিছুর উত্তর দিতে পারে। আমার অঙ্কের ফলাফল বিভিন্ন বিজ্ঞানীর ব্যবহারিক পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে কোনও পার্থক্য তৈরি করে না। বরং আমার অঙ্কের বিজ্ঞান এমন কিছু বিজ্ঞানের দিক নির্দেশ করে যে বর্তমান বিজ্ঞানীদের অনেকেই সেই তত্ত্বের খোঁজ জানেন না। ই ইজিকালটু এম সি স্কোয়ার।

ই হল শক্তি, এম হল পদার্থ, সি হল আলোর গতিবেগ।সি যখন এম বা পদার্থকে আঘাত করে তখন শক্তির উৎপন্ন হয়। বিজ্ঞানীরাই বলেছেন শক্তি মানে একগুচ্ছ আলোর কণার শক্তি বা কোয়ান্টা বা ফোটন। এখন মনে করুন কাউকে থাপ্পড় দিলে সেই থাপ্পড়ের অনুভূতি সেই ব্যক্তি কাউকে বলে বোঝাতে পারেন না, যাকে থাপ্পড় দেওয়া হয় সেই তা বোঝে। একইভাবে সি দিয়ে এমকে আঘাত করা হলে এম-এর ভিতরে একটি প্রক্রিয়া চলে সেই প্রক্রিয়া কী ধরনের তা অন্য অনেক বিজ্ঞানী জানেন না। কমপ্লিট ইউনিফায়েড থিওরি সেই ব্যাখা দিতে পারে।”

এই বিষয় ছাড়া নির্মলেন্দুবাবুর লেখা ‘মিস্ট্রি অফ অরিজিন অফ দ্য ইউনিভার্স’ প্রকাশিত হয়েছে। এই বইটিও কমপ্লিট ইউনিফায়েড থিওরির একটি অংশ। ১৫টি দেশে এখন এই বইয়ের তত্ত্ব নিয়ে কাজ হচ্ছে। ৩৬৪ জন বিজ্ঞানী বইটি পড়েছেন।

১৫টি দেশে এখন তাঁর বইয়ের তত্ত্ব নিয়ে কাজ হচ্ছে

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তাঁর তত্ত্ব নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন বিজ্ঞানী নির্মলেন্দুবাবু। বিভিন্ন স্থানে তাঁর অনেক পুরস্কার ও মানপত্র রয়েছে। এমনকি লন্ডনের নোবেলজয়ী এক বিজ্ঞানীও নাকি তাঁর বইয়ের খোঁজ করে তাঁকে চিঠি দিয়েছিলেন। এবছর ২০ মে আমেরিকার একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে নির্মলেন্দুবাবুর একটি রচনা সাড়া ফেলে। সেখানে করোনা নিয়ে তিনি কিছু কথা মেলে ধরেন। তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল জার্নালে আমার নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। আমাদের শরীরে বিভিন্ন কোষ রয়েছে।

এই সংখ্যাটি নির্দিষ্ট। প্রশ্ন হল মানুষ থেকে সব জীবজন্তুর কোষ সংখ্যা নির্দিষ্ট হওয়ার অঙ্ক এল কীভাবে? বিষয়টিকে আমি কাপল সিস্টেম দিয়ে ব্যাখা করেছি। করোনা ভাইরাসও আরএনএ ডিএনএ সেলের কাপল সিস্টেমের ভিতরে রয়েছে। এই কাপলিং সিস্টেম পরিবর্তন করলে করোনার চরিত্র বদলে যাবে।” আবার আত্মা নিয়ে নির্মলেন্দুবাবুর আর একটি থিওরি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তাতে তিনি বহু অঙ্ক করে আত্মা ও পরমাত্মার অস্তিত্ব রয়েছে বলে যুক্তি মেলে ধরেছেন। নির্মলেন্দুবাবু বলেছেন, “আত্মা নিয়ে বিরাট ওই ব্যাখায় আমি আত্মার ওজন নির্ণয় করে দিয়েছি।

বিজ্ঞানী ডালটন দেহের কোষ সম্পর্কে গবেষণার জন্য যে ওজন বের করেছেন সেই ওজনের সঙ্গে আত্মার ওজন প্রায় সমান। সেই তত্ত্ব অনুযায়ী আমার হিসাবে আত্মার ওজন ওয়ান পয়েন্ট সিক্স সিক্স ইনটু টেন টু দ্য পাওয়ার মাইনাস টোয়েন্টি ফোর গ্রাম। পরমাত্মার নির্দেশেই চলে আত্মা। গীতার ব্যাখ্যা পুরো বিজ্ঞান নির্ভর। তবে পুরুষের আত্মার ওজন মহিলাদের আত্মার ওজনের তুলনায় বেশি।”

এভাবে বিজ্ঞান, দর্শন নির্ভর করে বিভিন্ন ব্যাখ্যা তৈরির পিছনে দিনরাত মেতে থাকেন নির্মলেন্দুবাবু। পাশাপাশি চলে সাহিত্যচর্চাও। তিনি বলেন, যে ক’দিন বাঁচবেন বিজ্ঞান, সাহিত্য, দর্শন নিয়েই বাঁচবেন।

Check Also

তারা মায়ের স্বপ্নাদিষ্ট অব্যর্থ ওষুধ খেয়ে সুস্থ হন রোগীরা, রয়েছে ৪০০ বছরের প্রাচীন মন্দিরের মাহাত্ম্য

তারা মায়ের স্বপ্নাদিষ্ট অব্যর্থ ওষুধ খেয়ে সুস্থ হন রোগীরা, রয়েছে ৪০০ বছরের প্রাচীন মন্দিরের মাহাত্ম্য ...