







এজ ইজ দা অনলি এ নাম্বার। এই কথাই বুঝিয়ে দিলেন আশির কোঠায় পৌঁছে যাওয়া লখনৌ এর চাচা। আশির কোঠায় পৌঁছেছেন তাতে কি? জীবনের বেঁচে থাকার রসদ তো আসে মন থেকে। তাই দিব্যি বার্ধক্যকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন লখনও চরবাগ স্টেশনের চাচা। কুলি হয়েছেন খাটবে এমনকি নতুন কথা! নতুনত্ব আছে বৈকি।




শুধুমাত্র অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন তা কিন্তু নয়।চার্বাক স্টেশন এর সব থেকে বয়স্ক এই কুলির ক্ষেত্রে সেটুকু বলাই কিন্তু যথেষ্ট নয়। বলা যায় বিনিপয়সায় খেটে চলেছে। স্টেশনে নেমে আসা আসা একের পর এক পরিযায়ী শ্রমিকের মালপত্র ব্যাগ নিয়ে চলেছেন তিনি একাই। তার লাগে না কোন সাহায্য।




এই কঠিন সময় তিনি যেভাবে দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করছেন তাতে তার মানবিকতা কত উঁচু দরের হতে পারে সেটা বোঝা যাচ্ছে। তাই তাকে এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছে রেখেছে সবাই শুধুমাত্র মানবিক উদ্যোগে।চার্বাক স্টেশন এই চাচার নাম মুজিবুল্লাহ। তাকে সেখানেই এক নামে সবাই চেনে।




৮০ বছর হলেও পেটের দায়ে তাকে স্টেশনে কুলির কাজ করতে হয়। তবে নিজের পরিস্থিতি থেকেও এখন তার কাছে বড় হয়ে উঠেছে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার সমস্যা। তাই তাদের সাহায্য করতে একটুও দ্বিধাবোধ করেন না তিনি।স্টেশনের প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন বুড়ো হাড়ের ভেলকি কাকে বলে মুজিবুল্লাহকে দেখলেই বোঝা যায়।




এই বয়সেও একাই ৫০ কেজির বেশি মালপত্র তুলে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত চলে যেতে পারেন এই অশীতিপর বৃদ্ধ। তার জন্য এতদিন টাকার দরদাম করলেও এ কঠিন সময়ে তার চিন্তা-ভাবনা বিস্তর প্রভাব ফেলেছে সাধারণ মানুষের মনের উপর। তার এই উদ্যোগ রেখে এরপর কোনো মানুষই হয়তো তার সাথে আর দরাদরি করতে যাবেন না।




পরিযায়ী শ্রমিকের মাল গন্তব্যে পৌঁছে দেবার বিনিময়ে একটি টাকাও নেন না মুজিবুল্লাহ। তিনি অন্য সময় যথাযথ টাকা দাবি করলেও এই সময় এই পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছ থেকে একটা টাকাও তিনি নেননি।তিনি বলেন,”লক ডাউনে যেরকম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন ভীন রাজ্য থেকে আসা মানুষগুলোর পাশে সেই কথা ভেবেই আমার দাঁড়ানো।




এই পরিষেবা মুজাফফর এর কাছে খিদমৎ “। অর্থাৎ কঠিন সময় মানুষের কাজ করে দেওয়া। এমন কথাই জানিয়েছেন সংবাদপত্রকে তিনি। শুধু পরিযায়ী শ্রমিকদের মালপত্র বয়ে ক্ষান্ত থাকেননি তিনি। এরপর তাদের কারও হাতে তুলে দিয়েছেন জলের বোতল কোন অক্তুদের মুখে তুলে দিয়েছেন খাবার। নজিবুল্লাহ বলেছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও তিনি আয় করতে পারবেন, কিন্তু মানুষের সেবা করা মূল ধর্ম-কর্ম।




এই সুযোগ তিনি আর কোনদিন পাবেন না।তাইতো স্টেশন ফিরতি মানুষগুলোর মুজিবুল্লাহ র মত মানুষের ছবি তুলে তার কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে। যাতে প্রত্যেকটি মানুষ যেন চিনে নিতে পারে এই মানবিক মানুষটিকে। যিনি আজ জাতপাত ধর্ম সবকিছু ভুলে মানবিকতাকে সবার আগে স্থান দিয়েছেন।



















