Home / Health / কালো কফ কিসের লক্ষণ, অধ্যাপক ডা. একেএম মোস্তফা হোসেন

কালো কফ কিসের লক্ষণ, অধ্যাপক ডা. একেএম মোস্তফা হোসেন

Copy

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কাশি ও কফ বা শ্লেষ্মা একই সঙ্গে বিদ্যমান থাকে; তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুকনো কাশি থাকে যাতে শ্লেষ্মা থাকে না।

শ্লেষ্মা হচ্ছে শ্বাসতন্ত্র থেকে নিঃসৃত এক প্রকার রস যা মুখে লালার এবং সাইনাসের নিঃসৃত রসের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে পরিপূর্ণতা পায়। শ্লেষ্মার মূল উপাদান হচ্ছে- পানি, মিউকাস, ম্যাক্রোফেজ, বিভিন্ন প্রকার শ্বেতকণিকা, এন্টিবডি, শ্বাসতন্ত্রের উপরের অংশে অবস্থিত স্থানীয় অণুজীবসমূহ। শ্বাসতন্ত্রের নিচের অংশ স্বাভাবিক অবস্থায় জীবাণুমুক্ত থাকে যা শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণে জীবাণুযুক্ত হতে পারে।

বিভিন্ন ধরনের রোগ শনাক্তকরণে শ্লেষ্মার পরিমাণ, রং, গন্ধ, বের হওয়ার সময় এবং সঙ্গে অন্য উপসর্গের (সমূহ) উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সুস্থ্য অবস্থায় শ্লেষ্মার পরিমাণ কিঞ্চিৎ, রং সাদা এবং দুর্গন্ধমুক্ত হয়ে থাকে।

স্বাভাবিক অবস্থায় যদিও শ্লেষ্মার রং সাদা হয়ে থাকে, কিন্তু বিভিন্ন রোগে এর রং পরিবর্তন হতে পারে। যেমন- লাল, হলুদ, সবুজাভ, ধূসর, কালো।

তাই শ্লেষ্মার স্বাভাবিক রং-এর পরিবর্তন হলে এটাকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হয় এবং রোগের ইতিহাস ও অন্য উপসর্গের উপস্থিতি সাপেক্ষে শারীরিক পরীক্ষা ও ল্যাবরেটরি পরীক্ষা করে সঠিক রোগ নির্ণয় করা হয়। রোগ সম্বন্ধে ধারণা লাভ ও রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে শ্লেষ্মার রং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ রকমই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কাশির সঙ্গে কালো কালো কফ বা শ্লেষ্মা বের হওয়া।

কাশির সঙ্গে কালো শ্লেষ্মা বের হওয়ার প্রধান কারণ নিম্নরূপ : ১. বায়ুদূষণ : বায়ুতে অতিরিক্ত ধুলাবালি ও কার্বনকণা যা শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসনালিতে প্রবেশ করে। ২. অতিরিক্ত ধূমপান : এ ক্ষেত্রে সিগারেট অথবা বিড়ির ছাই ও ধোঁয়া শ্বাসনালিতে প্রবেশ করে। ৩. বদ্ধ ঘরে প্রাকৃতিক জ্বালানি ব্যবহার : এ ক্ষেত্রে জ্বালানি পুড়ে যে ছাই তৈরি হয় তা শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসনালিতে প্রবেশ করে।

৪. শ্বাসনালির ছত্রাক সংক্রমণ : শ্বাসনালির কিছু কিছু ছত্রাক সংক্রমণে কালো রঙের শ্লেষ্মা বের হতে পারে; এগুলো প্রকৃতপক্ষে ছত্রাক সংক্রমণের কারণে মৃত শ্বাসনালির কোষসমূহ। ৫. নিউমোকোনি-ওসিস : যা কয়লা খনিতে কর্মরত শ্রমিকদের হয়ে থাকে। এ রোগে শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসনালিতে প্রবেশ করা কার্বনকণা ফুসফুসে জমা হওয়ার কারণে সেখানকার কোষ মরে যায় যা পরবর্তীতে কালো রঙের শ্লেষ্মার আকারে বের হয়।

করণীয় : অনতিবিলম্বে ধূমপান পরিত্যাগ করা। বদ্ধ ঘরে প্রাকৃতিক জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ করা। কয়লা খনিতে কর্মরত থাকলে উপযুক্ত সতর্কতা গ্রহণ করা ও পেশা পরিবর্তন করা। অন্য কোনো উপসর্গ আছে কিনা তা লক্ষ্য করা। বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া।

লেখক : অ্যাজমা ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ

ইউনাইটেড হাসপাতাল, গুলশান, ঢাকা।

Check Also

১টা মা’ত্র পে’য়া’রা ব’দ’লে দি’তে পা’রে আ’পনা’র জী’ব’ন। বলছে গ’বেষ’ণা প’ড়ুন

Copy সকলের কাছেই পেয়ারা বেশ পছন্দের ফল। সে কাঁচাই হোক বা পাকা। পছন্দের হলেও প্রতিদিন ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *