উৎকৃষ্ট মানের সুস্বাদু ও খাঁটি ইলিশ মাছ চেনার কৌশল – ভাপা ইলিশ, সর্ষে ইলিশ, ইলিশ পাতুরি, ইলিশ পোলাও, ইলিশ ভাজা বা ইলিশের মালাইকারী— ভোজনরসিক বাঙালির কাছে ইলিশ মানেই ‘ভজ্য রুপো’, বাঙালির সাধের রুপালি শস্য! কিন্তু ইলিশ এখনও ১২০০-১৫০০ টাকা
কেজি দরে বিকোচ্ছে। তাই সাধ থাকলেও সাধ্যে কুলোচ্ছে না বেশির ভাগ আম বাঙালির। তবে বাংলাদেশ সরকারের সৌজন্যে পুজোর আগে মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে আসতে চলেছে ইলিশ। পুজোর আগে প্রায় পনেরোশো মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ ধাপে ধাপে বাংলার বাজারে পৌঁছাবে।
এর মধ্যেই প্রায় ২০ মেট্রিক টন বাংলাদেশের ইলিশ পৌঁছে গিয়েছে বাংলার বাজারে। কিন্তু কী করে চিনবেন কোনটা পদ্মার আর কোনটা গুজরাতের ইলিশ? বৈশিষ্ট্যে কি তেমন কোনও ফারাক আছে? জেনে নিন কী বলছেন মাছ ব্যবসায়ী আর বিশেষজ্ঞরা… ইলিশের ভাল-মন্দ
নিয়ে আম বাঙালির মধ্যে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে। নদী না সমুদ্রের— কোন ইলিশের স্বাদ বেশি? ভাল ইলিশ চিনবেন কী করে? কলকাতার পাতিপুকুরের জনৈক এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, গুজরাতের বা সমুদ্র থেকে ধরা ইলিশ আকারে তুলনামূলক ছোট আর লম্বাটে। পদ্মা বা নদীর
ইলিশ দেখতে তুলনামূলক ভাবে একটু গোলগাল, আকারেও বড়। বাংলাদেশের মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইলিশ বিষয়ক প্রধান গবেষক কর্মকর্তা ডঃ আনিসুর রহমান জানান, ইলিশ সারা বছর সাগরে থাকে। শুধু ডিম ছাড়ার সময় নদীতে আসে। নদীর ইলিশ একটু গোলগাল হবে,
আর সাগরের ইলিশ হবে সরু ও লম্বাটে। নদীর ইলিশ, বিশেষ করে পদ্মা, মেঘনার ইলিশ একটু বেশি উজ্জ্বল। নদীর ইলিশ চকচকে বেশি হয়, বেশি রুপালী ধরনের। সাগরের ইলিশ তুলনামূলক কম উজ্জ্বল। এছাড়া, পদ্মা, মেঘনা অববাহিকার ইলিশ মাছের আকার অনেকটা পটলের
মতো। অর্থাৎ, মাছের মাথা আর লেজ সরু আর পেটটা মোটা, গোলাকার দেখতে হয়। তিনি বলেন, ইলিশ মাছ আকারে যত বড় হবে, তত তার স্বাদ খোলে। সমুদ্রের নোনা জল আর নদীর মিঠা জলেতে বসবাসের কারণেও ইলিশের স্বাদে কিছুটা পার্থক্য হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে নদীর
ইলিশের স্বাদই বেশি হয়। তবে ডিম ছাড়ার আগ পর্যন্তই ইলিশের স্বাদ সবচেয়ে বেশি থাকে। ইলিশ যদি দীর্ঘদিন কোল্ড স্টোরেজে রাখা হয়, তাহলে তার স্বাদ কমে যায়। কমে যায় ঔজ্জ্বল্যও। তাই একটু সময় নিয়ে দেখে তবেই ঘরে তুলুন সেরা স্বাদের ভাল ইলিশ।