দ্রুত বংশ বিস্তারকারী মাছটি জলজ পোকামাকড় ও শ্যাওলার পাশাপাশি ছোট মাছ এবং
মাছের পোনা খেয়ে থাকে। তাছাড়া সাকার ফিশের পাখনা খুব ধারালো। ধা’রা’লো’ পাখনার আ’ঘা’তে সহজেই অন্য মাছের দেহে ক্ষ”ত তৈরি হয় এবং
পরবর্তীতে পচন ধরে সেগুলো মারা যায়। সাকার ফিশ রা”ক্ষু”সে প্রজাতির না হলেও প্রচুর পরিমাণে খাবার ভ’ক্ষণ করে। এতে
দেশীয় প্রজাতির মাছের সঙ্গে খাদ্যের জোগান নিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতা হয়। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে না
বিলুপ্তির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছের। বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতির সাকার ফিশ ১৬-১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। মাছটি পানি ছাড়াই প্রায়
২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বাঁচতে পারে। মাছ চাষীরা অভিযোগ করেন, তাদের ঘেরে এই মাছ ঢুকে পড়ে চাষের উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। এর ব্যাপক বিস্তার ঘটলে
দেশীয় প্রজাতির মাছ হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মৎস্য গবেষকরা। অনুসন্ধানে জানা যায়, সাকার ফিশের প্রভাবে মায়ানমার ও আরব আমিরাতের মৎস্য চাষীরা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছে। বাংলাদেশে কয়েক বছর আগে উপকূলীয় জেলাগুলোতে প্রথম এই মাছের দেখা মিলে।
তবে এখন সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুরের মতো জায়গা যা উপকূল থেকে অনেক দূরে, সেখানেও দেখা মিলছে এই মাছের। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ বলেন, সাকার মাউথ ক্যাটফিশ মাছটি সহজেই নতুন পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হয়ে দ্রুত বংশ বিস্তার করতে সক্ষম।
অনেকে শুরুর দিকে অ্যাকুরিয়াম ফিশ হিসেবে পালন করলেও পরবর্তীতে মাছটি বড় হয়ে গেলে তখন পুকুর বা ডোবায় ছেড়ে দেয়। সেখানে মাছটি নতুন পরিবেশে খাপ খেয়ে বংশ বিস্তার শুরু করে। মাছটি খেতে সুস্বাদু না হওয়ায় সাধারণত কেউ মাছটি খায় না এবং বাজারেও মাছটির কোনো চাহিদা নেই। মাছটি ভক্ষণে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কিনা সে বিষয়ে এখনো কোনো গবেষণা হয়নি।
তিনি বলেন, এ মাছটি একবার কোনো জলাশয়ে ঢুকে পড়লে এর বিস্তার রোধ করা খুব কঠিন। চাষের পুকুরে এই মাছ ঢুকে পড়লে অন্য মাছের সঙ্গে খাবার ও বাসস্থান নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করে। এতে করে বাইরে থেকে পর্যাপ্ত খাবার প্রদান করলেও কাঙ্ক্ষিত মাছের উৎপাদন পাওয়া যায় না। অন্যদিকে চাষযোগ্য মাছ সাকার ফিশের সঙ্গে খাবার ও বাসস্থানের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে না। এভাবে মাছ চাষীরা লোকসানের মুখে পড়েন।